হেপি ভ্যালেন্টাইন ডে: ইতিহাস,প্রথা, মিথ ও কুসংস্কার
ভালবাসা
দিবস। এ দিনটিতে
বিশ্বের তাবৎ প্রেমিক প্রেমিকারা ভালবাসা বিনিময় করবেন এবং ভালবাসা কার্ড পাঠাবেন। আপনি যদি একা
মানুষ হোন কিংবা বেজায় রোমান্টিক তবে দিনটির সূচনালগ্নে আপনাকে একটু সতর্ক থাকতে হবে।
ভোরে ঘুম থেকে জাগার পর ঘরের কি-হোল দিয়ে বাইরে তাকান। প্রচলিত ধারনা যে কি-হোল দিয়ে আপনি যদি প্রথম দর্শনে কোন একা মানুষকে দেখেন তবে সারা বছর আপনাকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অর্থাৎ এ বছরটি আপনাকে সঙ্গী কিংবা সঙ্গীবিহীন কাটাতে হবে। আর আপনি কোন দম্পত্তি কিংবা বেশ কয়েকজন মানুষকে দেখেন তবে নির্ঘাৎ এ বছরেই আপনি আপনার কাঙ্খিত প্রেয়সী কিংবা প্রিয় পুরুষটিকে খুঁজে পাবেন। আর যদি দেখেন কোন মোরগ কোন মুরগীকে ধাওয়া করছে তবে এ বছর শেষ হবার পূর্বেই আপনি বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। শহরেতো আর মোরগ মুরগীর ধাওয়া ধাওয়ী দেখা যাবে না তবে নিদেনপে কবুতর কিংবা চড়ই পখীর যুগল বিচরণ দেখলে আপনার ভাগ্য ফিরে যেতে পারে।
ভ্যালেন্টাইন দিবস বা ভালবাসা দিবসে একা মানুষের আরো অনেক বিপত্তি আছে। ভোরে প্রথম মানুষটিকে দেখার মধ্যেও অনেক সম্ভাবনা অথবা সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পরে। আপনি যদি অবিবাহিত হোন এবং সঙ্গী পাবার অপোয় আছেন তবে ১৪ ফেব্রুয়ারী এ দিনের শুভ্র সকালে যেন মানুষটিকে প্রথম দেখার সুযোগ করে নিন তাকে বিবাহ করার গভীর একটা ইচ্ছে আপনার মনের মধ্যে আছে। পছন্দের কিংবা দেখার হেরফের হলে বিপত্তি বাড়ার সম্ভাবনা। প্রচলিত বিশ্বাস যে এ দিন সকালে যাকে (বিপরীত লিঙ্গের) আপনি দেখবেন তাকেই আপনাকে বিয়ে করতে হবে। কিংবা কোন কারণে বিয়ে না হলেও এ প্রথম দর্শনের প্রভাব কাটিয়ে উঠা আপনার পে কষ্টকর হবে। আপনি সন্দেহ বাতিকগ্রস্ত কেউ হউন তবে নেহাৎ নিশ্চিত ফলাফলের জন্য পছন্দের মানুষটিকে টেলিফোন কল দিন এবং বাড়ীতে আসার নিমন্ত্রণ দিন। দরজায় তার কড়া নাড়ার শব্দ না পাওয়া পর্যন্ত খুলবেন না দরজা। প্রয়োজন হলে দোর এঁটে তার জন্য দুপুর পর্যন্ত অপোয় থাকুন।
ইতিহাস ও প্রথা :
ভ্যালেন্টাইন'স ডে উদযাপন শুরু হয় রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারী ছিল রোমান দেবদেবীদের রানী জুনোর সম্মানে পবিত্র দিন। রোমানরা তাকে নারী ও ব্বিাহের দেবী বলে বিশ্বাস করত। দিনটি অনুসরণ করে পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারী পালিত হতো লুপারকেলিয়া উৎসবের বিশেষ ভোজ। সে সময় তরুণ এবং তরুণীদের জীবনযাপন ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ পৃথক। সম্রাট কডিয়াসের শাসনামলে রোম কয়েকটি জনবিরোধী এবং রক্তয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। হিংস্র প্রকৃতির কডিয়াস সে সময় তার সেনাবাহিনীতে যথেষ্ট সংখ্যক সৈন্য ভর্তি না হওয়া নিয়ে খুব কঠিন সময় পার করছিলেন। রোমান পুরুষদের তাদের পরিবার ও ভালবাসা ত্যাগ করে যুদ্ধে না যাওয়াক্ে এর প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করছিলেন তিনি। ফলে কডিয়াস সমগ্র রোমে সব ধরনের বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সে সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন রোমের একজন ধর্মযাজক ছিলেন। তিনি এবং সেন্ট ম্যারিয়াস খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী তরুণ-তরুণীদের গোপনে বিয়ে দিতেন এবং বিবাহিত যুগলদের সহযোগিতা দিতেন। এ কারণে রোমের ম্যাজিস্ট্রেট তাকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করেন।
ভ্যালেন্টাইন বন্দি থাকা অবস্থায় অনেক তরুণ তাকে দেখতে যেত এবং কারা করে জানালা দিয়ে তার উদ্দেশ্যে চিরকুট ও ফুল দিয়ে তার উদ্দেশ্যে লেখা চিরকুট ও ফুল দিয়ে তাদের ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত। হাত নেড়ে তাকে জানাত যে, তারা 'যুদ্ধ নয়, ভালবাসায় বিশ্বাসী।' এদের মধ্যে একজন ছিলেন কারারীর মেয়ে। তার বাবা তাকে ভ্যালেন্টাইনের সাথে সাৎ করতে এবং তার সাথে কথা বলতে সুযোগ করে দিত। মেয়েটি তাকে তার প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা, কডিয়াসের নির্দেশ অমান্য করে তরুণ-তরুণীদের গোপনে বিয়ে দেয়া এবং ভালোবাসায় তার সমর্থনের কথা জানায়। এক সময় তারা একে অপরের বন্ধু হয়ে যায়। ভ্যালেন্টাইনের শিরচ্ছেদ করে হত্যার দিনে তিনি মেয়েটিকে তার বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস নিয়ে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। এতে তিনি লিখেছিলেন, 'লাভ ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন'। বিচারকের নির্দেশ অনুসারে সে দিনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের এ আত্মত্যাগের দিনটি ছিল ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে লুপারকেলিয়া অনুষ্ঠানের দিন ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের পরিবর্তে ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেন। পরে এটি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে 'ভ্যালেন্টাইন'স ডে' নামে দ্রুত পরিচিতি লাভ করে। কালের ধারাবাহিকতায় ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে এবং সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাহারি ফুল, কবিতা ও ছোটখাট উপহার বিনিময়ের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে দিনটি ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিস এস্থার হাওল্যান্ড প্রথম ভ্যালেন্টাইন কার্ড পাঠানোর প্রচলন করেন।
মিথ ও কুসংস্কার :
আজ থেকে শতবর্ষ আগে ব্রিটেনে ছোট শিশুরা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি গান গেয়ে দিনটি উদযাপন করত। ওয়েলসে কাঠের তৈরি চামচের ওপর হৃদপিন্ড, তালা, শেকল প্রভৃতির নকশা খোদাই করে এ দিনে উপহার দেয়া হত। এর মানে ছিল 'ইউ আনলক মাই হার্ট'। কোথাও আবার এ দিনে তরুণীরা রোদে একটি বাটিতে পরিষ্কার পানি রেখে তার ওপর চেয়ে থাকত। ধারণা করা হত, যার ছবি ওই পানিতে ভেসে উঠবে সে-ই হবে তার কাঙ্তি ভ্যালেন্টাইন। কোথাও ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে তরুণ-তরুণীরা তাদের জামার হাতায় কাঙ্তি ভালবাসার মানুষটির নাম লিখে সপ্তাহজুড়ে ঘুরে বেড়াত। তারা ধরেই নিতো, এর ফলে সহজেই কাছে পাবে তার ভালোবাসার মানুষটিকে।
কোনো কোনো দেশে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে অবিবাহিত ছেলেরা মেয়েদের নতুন পোশাক উপহার হিসেবে পাঠাত এবং মেয়েটি ওই পোশাক গ্রহণ করলে ধরে নেয়া হতো, মেয়েটি তাকে বিয়ে করতে রাজী আছে। ওইসব দেশে কিছু লোকদের ভ্যালেন্টাইনের ওপর বিশ্বাস আরো একধাপ এগিয়ে। তারা বিশ্বাস করত, ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যদি কোন মেয়ে তার মাথার ওপর একটি ফিতা উড়ে যেতে দেখে তাহলে তার বিয়ে হবে নাবিকের সাথে, যদি সে একটি চড়ুই পাখি দেখে তবে তার বিয়ে হবে একজন দরিদ্র লোকের সাথে, কিন্তু সে হবে খুবই সুখী। আর যদি সে সোনালী রঙের মাছ দেখে তবে তার বিয়ে হবে একজন প্রভাবশালী ধনাঢ্য লোকের সাথে।
পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন সব হাজারো প্রথা, কুসংস্কার ও মিথ জড়িয়ে আছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের কাহিনীকে ঘিরে। ভালোবাসা সব সময়ই সর্বজনীন। আর ভালোবাসার জন্য শুধু ভ্যালেন্টাইন কেন, যুগে যুগে পৃথিবীর বহু দেশে অসংখ্য মানুষ অকাতরে জীবন দিয়েছেন। জয় হোক ভালোবাসার।
ভোরে ঘুম থেকে জাগার পর ঘরের কি-হোল দিয়ে বাইরে তাকান। প্রচলিত ধারনা যে কি-হোল দিয়ে আপনি যদি প্রথম দর্শনে কোন একা মানুষকে দেখেন তবে সারা বছর আপনাকে দুর্ভোগ পোহাতে হবে। অর্থাৎ এ বছরটি আপনাকে সঙ্গী কিংবা সঙ্গীবিহীন কাটাতে হবে। আর আপনি কোন দম্পত্তি কিংবা বেশ কয়েকজন মানুষকে দেখেন তবে নির্ঘাৎ এ বছরেই আপনি আপনার কাঙ্খিত প্রেয়সী কিংবা প্রিয় পুরুষটিকে খুঁজে পাবেন। আর যদি দেখেন কোন মোরগ কোন মুরগীকে ধাওয়া করছে তবে এ বছর শেষ হবার পূর্বেই আপনি বিয়ের পিঁড়িতে বসবেন। শহরেতো আর মোরগ মুরগীর ধাওয়া ধাওয়ী দেখা যাবে না তবে নিদেনপে কবুতর কিংবা চড়ই পখীর যুগল বিচরণ দেখলে আপনার ভাগ্য ফিরে যেতে পারে।
ভ্যালেন্টাইন দিবস বা ভালবাসা দিবসে একা মানুষের আরো অনেক বিপত্তি আছে। ভোরে প্রথম মানুষটিকে দেখার মধ্যেও অনেক সম্ভাবনা অথবা সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পরে। আপনি যদি অবিবাহিত হোন এবং সঙ্গী পাবার অপোয় আছেন তবে ১৪ ফেব্রুয়ারী এ দিনের শুভ্র সকালে যেন মানুষটিকে প্রথম দেখার সুযোগ করে নিন তাকে বিবাহ করার গভীর একটা ইচ্ছে আপনার মনের মধ্যে আছে। পছন্দের কিংবা দেখার হেরফের হলে বিপত্তি বাড়ার সম্ভাবনা। প্রচলিত বিশ্বাস যে এ দিন সকালে যাকে (বিপরীত লিঙ্গের) আপনি দেখবেন তাকেই আপনাকে বিয়ে করতে হবে। কিংবা কোন কারণে বিয়ে না হলেও এ প্রথম দর্শনের প্রভাব কাটিয়ে উঠা আপনার পে কষ্টকর হবে। আপনি সন্দেহ বাতিকগ্রস্ত কেউ হউন তবে নেহাৎ নিশ্চিত ফলাফলের জন্য পছন্দের মানুষটিকে টেলিফোন কল দিন এবং বাড়ীতে আসার নিমন্ত্রণ দিন। দরজায় তার কড়া নাড়ার শব্দ না পাওয়া পর্যন্ত খুলবেন না দরজা। প্রয়োজন হলে দোর এঁটে তার জন্য দুপুর পর্যন্ত অপোয় থাকুন।
ইতিহাস ও প্রথা :
ভ্যালেন্টাইন'স ডে উদযাপন শুরু হয় রোমান সাম্রাজ্যের সময় থেকে। প্রাচীন রোমে ১৪ ফেব্রুয়ারী ছিল রোমান দেবদেবীদের রানী জুনোর সম্মানে পবিত্র দিন। রোমানরা তাকে নারী ও ব্বিাহের দেবী বলে বিশ্বাস করত। দিনটি অনুসরণ করে পরের দিন ১৫ ফেব্রুয়ারী পালিত হতো লুপারকেলিয়া উৎসবের বিশেষ ভোজ। সে সময় তরুণ এবং তরুণীদের জীবনযাপন ব্যবস্থা ছিল সম্পূর্ণ পৃথক। সম্রাট কডিয়াসের শাসনামলে রোম কয়েকটি জনবিরোধী এবং রক্তয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছিল। হিংস্র প্রকৃতির কডিয়াস সে সময় তার সেনাবাহিনীতে যথেষ্ট সংখ্যক সৈন্য ভর্তি না হওয়া নিয়ে খুব কঠিন সময় পার করছিলেন। রোমান পুরুষদের তাদের পরিবার ও ভালবাসা ত্যাগ করে যুদ্ধে না যাওয়াক্ে এর প্রধান কারণ হিসেবে দায়ী করছিলেন তিনি। ফলে কডিয়াস সমগ্র রোমে সব ধরনের বিয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। সে সময় সেন্ট ভ্যালেন্টাইন রোমের একজন ধর্মযাজক ছিলেন। তিনি এবং সেন্ট ম্যারিয়াস খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী তরুণ-তরুণীদের গোপনে বিয়ে দিতেন এবং বিবাহিত যুগলদের সহযোগিতা দিতেন। এ কারণে রোমের ম্যাজিস্ট্রেট তাকে গ্রেফতার করে কারাবন্দি করেন।
ভ্যালেন্টাইন বন্দি থাকা অবস্থায় অনেক তরুণ তাকে দেখতে যেত এবং কারা করে জানালা দিয়ে তার উদ্দেশ্যে চিরকুট ও ফুল দিয়ে তার উদ্দেশ্যে লেখা চিরকুট ও ফুল দিয়ে তাদের ভালবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করত। হাত নেড়ে তাকে জানাত যে, তারা 'যুদ্ধ নয়, ভালবাসায় বিশ্বাসী।' এদের মধ্যে একজন ছিলেন কারারীর মেয়ে। তার বাবা তাকে ভ্যালেন্টাইনের সাথে সাৎ করতে এবং তার সাথে কথা বলতে সুযোগ করে দিত। মেয়েটি তাকে তার প্রতি ভালবাসা, শ্রদ্ধা, কডিয়াসের নির্দেশ অমান্য করে তরুণ-তরুণীদের গোপনে বিয়ে দেয়া এবং ভালোবাসায় তার সমর্থনের কথা জানায়। এক সময় তারা একে অপরের বন্ধু হয়ে যায়। ভ্যালেন্টাইনের শিরচ্ছেদ করে হত্যার দিনে তিনি মেয়েটিকে তার বন্ধুত্ব এবং ভালোবাসার প্রতি বিশ্বাস নিয়ে একটি চিরকুট লিখে রেখে যান। এতে তিনি লিখেছিলেন, 'লাভ ফ্রম ইউর ভ্যালেন্টাইন'। বিচারকের নির্দেশ অনুসারে সে দিনই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের এ আত্মত্যাগের দিনটি ছিল ২৬৯ খ্রিস্টাব্দের ১৪ ফেব্রুয়ারি। এরপর ৪৯৬ খ্রিস্টাব্দে পোপ জেলাসিয়াস সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের সম্মানে লুপারকেলিয়া অনুষ্ঠানের দিন ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখের পরিবর্তে ১৪ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করেন। পরে এটি সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের নামানুসারে 'ভ্যালেন্টাইন'স ডে' নামে দ্রুত পরিচিতি লাভ করে। কালের ধারাবাহিকতায় ১৪ ফেব্রুয়ারি প্রেমিক-প্রেমিকাদের কাছে ভ্যালেন্টাইন ডে এবং সেন্ট ভ্যালেন্টাইন এর কেন্দ্রীয় চরিত্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বাহারি ফুল, কবিতা ও ছোটখাট উপহার বিনিময়ের মধ্য দিয়ে সারা বিশ্বে দিনটি ব্যাপকভাবে উদযাপিত হয়। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের মিস এস্থার হাওল্যান্ড প্রথম ভ্যালেন্টাইন কার্ড পাঠানোর প্রচলন করেন।
মিথ ও কুসংস্কার :
আজ থেকে শতবর্ষ আগে ব্রিটেনে ছোট শিশুরা দল বেঁধে বাড়ি বাড়ি গান গেয়ে দিনটি উদযাপন করত। ওয়েলসে কাঠের তৈরি চামচের ওপর হৃদপিন্ড, তালা, শেকল প্রভৃতির নকশা খোদাই করে এ দিনে উপহার দেয়া হত। এর মানে ছিল 'ইউ আনলক মাই হার্ট'। কোথাও আবার এ দিনে তরুণীরা রোদে একটি বাটিতে পরিষ্কার পানি রেখে তার ওপর চেয়ে থাকত। ধারণা করা হত, যার ছবি ওই পানিতে ভেসে উঠবে সে-ই হবে তার কাঙ্তি ভ্যালেন্টাইন। কোথাও ফেব্রুয়ারির ১৪ তারিখে তরুণ-তরুণীরা তাদের জামার হাতায় কাঙ্তি ভালবাসার মানুষটির নাম লিখে সপ্তাহজুড়ে ঘুরে বেড়াত। তারা ধরেই নিতো, এর ফলে সহজেই কাছে পাবে তার ভালোবাসার মানুষটিকে।
কোনো কোনো দেশে ১৪ ফেব্রুয়ারিতে অবিবাহিত ছেলেরা মেয়েদের নতুন পোশাক উপহার হিসেবে পাঠাত এবং মেয়েটি ওই পোশাক গ্রহণ করলে ধরে নেয়া হতো, মেয়েটি তাকে বিয়ে করতে রাজী আছে। ওইসব দেশে কিছু লোকদের ভ্যালেন্টাইনের ওপর বিশ্বাস আরো একধাপ এগিয়ে। তারা বিশ্বাস করত, ১৪ ফেব্রুয়ারিতে যদি কোন মেয়ে তার মাথার ওপর একটি ফিতা উড়ে যেতে দেখে তাহলে তার বিয়ে হবে নাবিকের সাথে, যদি সে একটি চড়ুই পাখি দেখে তবে তার বিয়ে হবে একজন দরিদ্র লোকের সাথে, কিন্তু সে হবে খুবই সুখী। আর যদি সে সোনালী রঙের মাছ দেখে তবে তার বিয়ে হবে একজন প্রভাবশালী ধনাঢ্য লোকের সাথে।
পৃথিবীর অনেক দেশেই এমন সব হাজারো প্রথা, কুসংস্কার ও মিথ জড়িয়ে আছে সেন্ট ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগের কাহিনীকে ঘিরে। ভালোবাসা সব সময়ই সর্বজনীন। আর ভালোবাসার জন্য শুধু ভ্যালেন্টাইন কেন, যুগে যুগে পৃথিবীর বহু দেশে অসংখ্য মানুষ অকাতরে জীবন দিয়েছেন। জয় হোক ভালোবাসার।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন